This is default featured slide 1 title

Go to Blogger edit html and find these sentences.Now replace these sentences with your own descriptions.This theme is Bloggerized by Lasantha Bandara - Premiumbloggertemplates.com.

This is default featured slide 2 title

Go to Blogger edit html and find these sentences.Now replace these sentences with your own descriptions.This theme is Bloggerized by Lasantha Bandara - Premiumbloggertemplates.com.

This is default featured slide 3 title

Go to Blogger edit html and find these sentences.Now replace these sentences with your own descriptions.This theme is Bloggerized by Lasantha Bandara - Premiumbloggertemplates.com.

This is default featured slide 4 title

Go to Blogger edit html and find these sentences.Now replace these sentences with your own descriptions.This theme is Bloggerized by Lasantha Bandara - Premiumbloggertemplates.com.

This is default featured slide 5 title

Go to Blogger edit html and find these sentences.Now replace these sentences with your own descriptions.This theme is Bloggerized by Lasantha Bandara - Premiumbloggertemplates.com.

Monday, February 20, 2017

নবীন লেখকলেখিকাদের জন্য :: কীভাবে বই বের করবেন

মূল প্রবন্ধটি নিচে 'ভূমিকা' থেকে শুরু হয়েছে। ভূমিকার আগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কথা বলে নিই। একটা বই প্রকাশের আগে আপনাকে যথেষ্ট প্রস্তুতি নিতে হবে। আপনি যদি ব্লগলেখক হয়ে থাকেন, ব্লগে প্রকাশিত নিজের লেখাগুলো কিছুদিন পর পর পড়ুন। দেখবেন, অনেক কিছুই আপনার বদলাতে ইচ্ছে করছে, অনেক শব্দ বা বাক্য আপনার মন:পুত হচ্ছে না, অনেক শব্দ বা বাক্য বাহুল্য মনে হচ্ছে। এগুলো একটা একটা করে গভীর মনোযোগ সহকারে পড়ুন আর এডিট করুন। একটা শব্দের পরিবর্তন আপনার লেখার মান অনেক উপরে নিয়ে যেতে পারে। প্রথমবার যে-শব্দটার জন্য আপনার অনেক তৃষ্ণা ছিল, কিন্তু কিছুতেই আপনার মনে সেটি উদয় হয় নি, এডিটিঙের সময় হুট করে তা মাথায় ঢুকে যেতে পারে। ওটি জায়গামতো বসিয়ে দিন। যে-কথাগুলো নিস্প্রয়োজন তা কেটে বা ছেঁটে ফেলুন। এটি নিরীক্ষা করার উপায় হলো: 'এ লাইনটি কেটে ফেললে কি কোনো ক্ষতি হচ্ছে?' ক্ষতি না হলে তা রেখে দেয়ার দরকার নেই।

বানানের ব্যাপারে খুব বেশি সতর্ক থাকুন। 'বাংলা একাডেমী বাংলা বানান-অভিধান' বইটি সব সময় হাতের কাছে রাখুন। এমনকি সবচেয়ে পরিচিত শব্দটির বানানও অভিধান দেখে নিশ্চিত হয়ে নিন। ধারনা, নাকি ধারণা? ধরণী, নাকি ধরণি? সরণী, নাকি সরণি? তীর, নাকি তির? দাদী, নাকি দাদি? ধরণ, নাকি ধরন? আপনি জানেন যে, প্রথমোক্ত বানানগুলোই সঠিক, কিন্তু অভিধান খুলে অবাক হয়ে দেখবেন যে ২য় বানানগুলো সঠিক। অতএব, বানানের ব্যাপারটা খুব সহজ না। আপনি একজন লেখক অথচ প্রতিটি বাক্য ভুল বানানে পরিপূর্ণ, তা গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। বানানের জন্য বাংলা একাডেমী প্রমিত বাংলা বানানের নিয়মটাটা আগে ভালোভাবে রপ্ত করে নিন। যাঁরা কবিতা লেখেন, তাঁদের জন্য এ পোস্টটাঅনেক উপকারে আসবে মনে হয়।

আরো কিছু ছোটোখাটো ভুলভ্রান্তি থাকে, যা ঠিক করে লিখলে ছাপার হরফ বা পৃষ্ঠা দেখতে সুন্দর লাগে। যেমন যতিচিহ্নের ব্যবহার:

ক) যতিচিহ্ন সবসময় অক্ষরের পর কোনো 'স্পেস' ব্যবহার না করে লিখুন। 

খ) যতিচিহ্নের পর সবসময় একটি 'স্পেস' ব্যবহার করুন (হাইফেন ছাড়া)।

এগুলো না করলে ছাপা হওয়া বইটি অসুন্দর দেখাবে। কিংবা, প্রকাশকের কাছে উপস্থাপন করার সময় তিনি এটি নতুন করে ছাপতে কিংবা এডিট করতে বলবেন, যা অনেক সময়-সাপেক্ষ হবে।


ভূমিকা - এ আর্টিকেলটি কারা পড়বেন?

এ আর্টিকেলটি শুধু তাঁদের জন্য, যাঁরা লেখালেখি করেন, এবং বই প্রকাশ করতে আগ্রহী, কিন্তু কীভাবে এ কাজটি করতে হবে সে ব্যাপারে কোনো ধারনা রাখেন না। তাঁদের জন্য কিছু টিপস।

এ আর্টিকেলটি পড়ে নবীন লেখকলেখিকাগণ যেমন উপকৃত হবেন, প্রকাশকগণও চোখের আড়ালে পড়ে থাকা অনেক প্রতিভার সন্ধান পেয়ে আনন্দিত হবেন বলে ধারনা করছি। এতে নবীন লেখকদের সাথে প্রকাশকদের একটা সেতু বন্ধন গড়ে উঠবে।

এ আর্টিকেলটি আমার অভিজ্ঞতার ফসল। অনেকের পক্ষেই এটা পড়ে সবকিছু বুঝে ওঠা সম্ভব না। আরো কিছু জানতে চাইলে মন্তব্যের ঘরে প্রশ্ন করুন, অথবা মেইল করুন এই ই-মেইলে : farihanmahmud@yahoo.com 



প্রথম অধ্যায়

বই ছাপতে গেলে মোটামুটি সাতটি প্রধান ধাপের মধ্য দিয়ে এগোতে হয়, যেমন: 
ক। প্রচ্ছদ 
খ। কম্পোজ বা টাইপ করা ও ট্রেসিং বের করা 
গ। পেস্টিং, প্লেট ও মেকিং 
ঘ। কাগজ 
ঙ। ছাপা 
চ। বই বাঁধাই
ছ। বই বাজারজাত করণ। এটিই হলো প্রধান ধাপ

কতোগুলো বই ছাপবেন? এটি খুব গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত যা সর্বাগ্রে ঠিক করে নিতে হবে। নবীন লেখক হিসেবে আমার পরামর্শ ২০০-৩০০ বই ছাপুন। বই বিক্রির ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী হয়ে থাকলে ৫০০ কপি পর্যন্ত ছাপতে পারেন।

১। প্রচ্ছদ। 

নিজে আঁকতে পারেন, বা কোনো নামিদামি শিল্পীকে দিয়ে আঁকাতে পারেন। শৌখিন কোনো বন্ধুকে দিয়েও এ-কাজটি করানো যেতে পারে। যে কোনো লেখকের প্রথম পছন্দ বর্তমানে ধ্রুব এষ, সচরাচর হুমায়ূন আহমেদের বইয়ের প্রচ্ছদশিল্পী তিনি। তসলিমা নাসরিনের ক-এর প্রচ্ছদ এঁকেছেন কাইয়ুম চৌধুরী। বিখ্যাত শিল্পীরা দুই থেকে পাঁচ হাজার টাকা নিয়ে থাকেন, এমনকি এর চেয়েও বেশি। কম খরচে করতে চাইলে শিক্ষা-নবিশদের খোঁজ করুন, যাঁরা বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় টুকিটাকি কাজ করছেন। তাঁদের প্রচ্ছদ দেখে আপনি সন্তুষ্ট হলে তাঁদেরকেও সন্তুষ্ট করে দিন। কারো সন্ধান না পেলে আপনার প্রকাশককে বলুন, তিনি মুহূর্তের মধ্যে অনেক রেডিমেড প্রচ্ছদ কিংবা পরিচিত শিল্পীর খোঁজ দিতে পারবেন। প্রচ্ছদ হওয়ার পর এটি প্রকাশকের নিকট হস্তান্তর করুন। পজিটিভ বের করার জন্য এটিকে এবার কম্পিউটারে নিতে হবে। দশ ফর্মা সাইজের তিনশত কপি প্রচ্ছদের কম্পিউটার গ্রাফিক্স সহ তিন থেকে পাঁচ হাজার টাকা খরচ পড়বে। এই খরচ কিন্তু প্রচ্ছদশিল্পীর পারিশ্রমিকের অতিরিক্ত, যা গ্রাফিক্স ডিজাইনারকে দিতে হয়।


২। কম্পোজ বা টাইপ করা। 

আপনার পুরো পাণ্ডুলিপি প্রকাশকের কাছে দেয়ার পর মনোনীত হলে তিনি ওটা কম্পোজ করতে দিয়ে দিবেন। ১৬ পৃষ্ঠা বা প্রচলিত কথায় ৮ পাতায় এক ফর্মা। প্রতি ফর্মা টাইপিং সহ ট্রেসিং বের করতে বর্তমান বাজারদর গড়ে তিনশত টাকা; প্রুফ চেকিং হবে দু বার। আপনি নিজে টাইপ করতে পারলে এ খরচটি বেঁচে যাবে। সেক্ষেত্রে বই ছাপবার জন্য আপনাকে পেইজ সেট-আপ করে নিতে হবে। 

পেইজ সেট-আপ। পৃষ্ঠার/কাগজের যে অংশটুকুতে লেখা থাকে, তাকে ‘ম্যাটার’ বলা হয়। একেক প্রকাশনিতে ম্যাটারের একেক রকম সাইজ অনুসরণ করা হয়, যেমন ৩.৭৫ ইঞ্চি বাই ৬.৭৫ ইঞ্চি, ৪ ইঞ্চি বাই ৭ ইঞ্চি, ৪ ইঞ্চি বাই ৭.২৫ ইঞ্চি, ৪.২৫ ইঞ্চি বাই ৭ ইঞ্চি, ৪.২৫ ইঞ্চি বাই ৭.২৫ ইঞ্চি। প্রকাশকের সাথে আলোচনা করে আপনি যে-কোনো মাপের ম্যাটারই নির্বাচন করতে পারেন। 

ফাইল মেনুতে যান> পেইজ সেট-আপ> পেপার সাইজ> ১১ বাই ৮.৫ (Letter) সিলেক্ট করুন। 

ওরিয়েন্টেশন দিন ‘ল্যান্ডস্কেপ’। 

এক জায়গায় লেখা দেখুন : Multiple Pages. এর ডানের বক্স থেকে 2 pages per sheet সিলেক্ট করুন।

মার্জিনে যান। ৩.৭৫ ইঞ্চি বাই ৬.৭৫ ইঞ্চি মাপের জন্য টপ .৮৫ এবং বটম .৯। আউট সাইড .৮৮ এবং ইনসাইড .৮৭। গাটার ০। ব্যস, পেইজ সেট-আপ হয়ে গেলো। 



৪ ইঞ্চি বাই ৭ ইঞ্চি মাপের জন্য টপ .৭৫ এবং বটম .৭৫। আউটসাইড .৭৫ এবং ইনসাইড .৭৫। গাটার ০।

৪ ইঞ্চি বাই ৭.২৫ ইঞ্চি মাপের জন্য টপ .৬৩ এবং বটম .৬২। আউটসাইড .৭৫ এবং ইনসাইড .৭৫। গাটার ০।

৪.২৫ ইঞ্চি বাই ৭.২৫ ইঞ্চি মাপের জন্য টপ .৬৩ এবং বটম .৬২। আউটসাইড .৬৩ এবং ইনসাইড .৬২। গাটার ০।

৪.২৫ ইঞ্চি বাই ৭ ইঞ্চি মাপের জন্য টপ .৭৫ এবং বটম .৭৫। আউটসাইড .৬৩ এবং ইনসাইড .৬২। গাটার ০।

এভাবে সেটিং সম্পন্ন করার পর যা হলো তাতে বইয়ের পাতার মাপ হবে উচ্চতা ৮.৫ ইঞ্চি এবং প্রস্থ প্রায় ৫.৫ ইঞ্চি। কিন্তু যে-অংশটুকুতে লেখা উঠবে (একে ম্যাটারিয়াল বা ম্যাটার বলে) তার মাপ হবে ৩.৭৫ ইঞ্চি বাই ৬.৭৫ ইঞ্চি বা ৪ ইঞ্চি বাই ৭ ইঞ্চি বা ৪ ইঞ্চি বাই ৭.২৫ ইঞ্চি বা ৪.২৫ ইঞ্চি বাই ৭ ইঞ্চি বা ৪.২৫ ইঞ্চি বাই ৭.২৫ ইঞ্চি। 

এরপর টাইপের জন্য ফন্ট নির্বাচন। সব ফন্টেই সুন্দর ছাপা ওঠে না। বর্তমানে বেশিরভাগ টাইপিস্ট সুটুন্নি এমজে-তে টাইপ করেন। যেসব পিসি থেকে ট্রেসিং বের করা হয়, ওগুলোতে সুনন্নি এমজে-তেই কোনোরূপ ঝামেলা ছাড়া কাজ করা যায়। আদর্শলিপি এক্সপ্যান্ডেড (স্কেল ৭৫ পার্সেন্ট)-এও ভালো ছাপা হয়। আপনি নিজে টাইপ করে ট্রেসিং বের করার জন্য বাংলাবাজারে আসুন, আপনার প্রকাশকের মাধ্যমে ট্রেসিং বের করুন। নিজেও করতে পারেন। অথবা, যারা ছাপার কাজ করে তাদের কাছে যান, তারা তাদের প্রিন্টার থেকে ট্রেসিং বের করে দিতে পারবে। ভালো ট্রেসিং পেপারে এক ফর্মা প্রিন্ট করতে ৮০ থেকে ১২০ টাকা লাগবে। মনে রাখবেন, এটি হতে হবে মিরর প্রিন্ট।



৩। পেস্টিং, প্লেট ও মেকিং। 

প্রতি ফর্মা পেস্টিং বাবদ ৩০ থেকে ৬০ টাকা। শুরুতেই প্রকাশকের সাথে চুক্তি করতে হবে আপনি কী ধরনের প্লেট ব্যবহা করবেন। মোটামুটি মানের নতুন (পিএস) প্লেটের দাম মেকিং সহ ৩০০ থেকে ৭০০ টাকা। ডিপিএস (একবার ব্যবহৃত) প্লেটের দাম এর অর্ধেক। তবে আপনি পিএস নাকি ডিপিএস প্লেটে বই ছাপবেন তা আগেই প্রকাশকের সাথে কথা বলে ঠিক করে নিন। পিএস প্লেটে ছাপা হয় খুব পরিষ্কার ও কোনোরূপ দাগ বা কালো ফোটামুক্ত; ডিপিএস প্লেটে কালো কালো ছোটো বিন্দু পড়ে কাগজের উপর, এতে ছাপা ঝকঝকে দেখায় না। অনকে দামি প্লেটও আছে। ইত্যাদি গ্রন্থ প্রকাশের প্রকাশক জয়নাল আবেদীন জুয়েল সাহেবের কাছে ২০ জানুয়ারি ২০১২ তারিখে খোঁজ নিয়ে জানা যায় যে তাঁর প্রকাশনীতে পেস্টিং বাবদ ফর্মা প্রতি ৫০ টাকা এবং প্লেট ফর্মা প্রতি ২৭০ টাকা হিসাবে নেয়া হয়।


৪। কাগজ। 

ধরুন বইটি পাঁচ ফর্মা সাইজের। এক রিমে ১০০০ তা (ডাবল ডিম ৫০০ তা-য় এক রিম, যা সিংগেল ডিম-এ ১০০০ তা হয়)। ১০০০ তা-কে ৫ ফর্মা দিয়ে ভাগ করুন। ভাগফল ২০০। অর্থাৎ, ১ রিম কাগজে ৫ ফর্মা সাইজের ২০০ কপি বই হয়। ৫৫, ৬০/৬১, ৬৫, ৭০, ৮০, ১২০ গ্রাম, ইত্যাদি ওজনের কাগজ পাওয়া যায় বই ছাপবার জন্য। তবে বেশিরভাগ বই ছাপা হয় ৭০ গ্রাম ওজনের কাগজে, এরপর ৮০ গ্রাম। ১২০ গ্রাম ওজনের কাগজের বই খুব কম দেখা যায়। ইত্যাদি গ্রন্থ প্রকাশের প্রকাশক জয়নাল আবেদীন জুয়েল সাহেবের কাছে ২০ জানুয়ারি ২০১২ তারিখে খোঁজ নিয়ে জানা যায় যে বর্তমানে ভালো মানের ৮০ গ্রাম ওজনের কাগজ ২৬০০ টাকার ওপরে; ৭০ গ্রাম ওজনের কাগজ ২১০০-২৫০০ টাকা রিম। আপনার বই ছাপতে যে পরিমাণ কাগজ লাগবে, তার চেয়ে প্রতি পাঁচ রিমের জন্য অতিরিক্ত হাফ থেকে এক রিম কাগজ বেশি কিনতে হবে; কারণ, ছাপাখানায় প্রচুর কাগজ নষ্ট হয়ে যায়। 


৫। ছাপা। 

প্রতি ফর্মা ছাপাখরচ ২০০-৪০০ টাকা, একটা নির্দিষ্ট সংখ্যক বই পর্যন্ত। তারপর বাড়বে। ইত্যাদি গ্রন্থ প্রকাশের প্রকাশক জয়নাল আবেদীন জুয়েল সাহেবের কাছে ২০ জানুয়ারি ২০১২ তারিখে খোঁজ নিয়ে জানা যায় যে তাঁর প্রকাশনীতে বর্তমানে ২৫০ টাকা হারে ছাপাখরচ নেয়া হয়ে থাকে।


৬। বাঁধাই। 

ইত্যাদি গ্রন্থ প্রকাশের প্রকাশক জয়নাল আবেদীন জুয়েল সাহেবের কাছে ২০ জানুয়ারি ২০১২ তারিখে খোঁজ নিয়ে জানা যায় যে তাঁর প্রকাশনীতে ৫ ফর্মা সাইজের জন্য ১১-১২ টাকা এবং ১০ ফর্মা সাইজের জন্য ১৩-১৪ টাকা দরে প্রতিটি বই বাঁধাই করা হয়ে থাকে। উৎকৃষ্ট বাঁধাইয়ের জন্য বই-প্রতি ১৫ টাকার উপরে খরচ পড়ে। সাধারণ মানের ছোট বইয়ের ক্ষেত্রে পাঁচ-সাত টাকায় হয়ে যায়। তবে সবকিছুই আপনাকে আগেভাগে ঠিক করে নিতে হবে। 


৭। বই বাজারজাত করণ। 

আপনি নতুন লেখক হয়ে থাকলে আমার পরামর্শ হলো সমস্ত বই আপনি আপনার নিজের কাছে নিয়ে যান। হ্যাঁ, শুরুতেই আপনি চুক্তি করুন, সমস্ত বই আপনাকে একদিনেই সরবরাহ করতে হবে। মনে রাখবেন, নবীন লেখক কখনো বই বিক্রির টাকা নিজের পকেটে নিতে পারেন না। পনর হাজার টাকায় বই ছাপলে আপনাকে ধরে নিতে হবে সতর হাজার টাকাই আপনি জলে ফেলে দিচ্ছেন:) অতিরিক্ত দুই হাজার হলো আকিকা ও আনুষঙ্গিক খরচ; একজনকে বই হাতে ধরিয়ে দিয়ে বলতে হবে আমার এই বইটি পড়ে শেষ করতে পারলে তোমাকে একশ, দুইশ, হাজার টাকা পুরস্কার দিব, তবেই না কেউ আপনার বই পড়বে। অবশ্যই ব্যতিক্রম আছে, তা হতে পারে আপনার ক্ষেত্রেও। এবার বইগুলো নিজের কাছে নেয়ার পর, বন্ধুদের মাঝে বিনা মূল্যে বা ন্যায্য মূল্যে কিংবা চড়াদামে বিক্রি করুন (যেহেতু আপনি এতো কষ্ট করে লিখেছেন)। পত্রপত্রিকার মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষদের সাথে বন্ধুত্ব করুন। সৌজন্য সংখ্যা পাঠান। দশজনকে দশটা বই পাঠালে হয়তো তিনচার জনে প্রতিক্রিয়া জানাবে। তিনজন খুব প্রশংসা করে চিঠি লিখবে। সেই প্রশংসায় অনুপ্রাণিত হয়ে হয়তো আরেকটা বই সত্বর লিখে ফেলবেন, এমন সময় দেখবেন যার একটুখানি প্রশংসার জন্য আপনি অধীর আগ্রহে দিন গুনছিলেন, তাঁর একটা চিঠি পেলেন- এটা কোনো বই-ই হয় নি, এতো বিরক্তিকর। যে কোনো লেখকের জন্য এই ধাক্কাটা হলো দুঃসহনীয়। এটা কাটিয়ে ওঠাই হলো বুদ্ধিমানের কাজ। অনেকেই এই এতোটুকু আঘাতে ভর্তা হয়ে যান, আর কোনো লেখাই লিখতে পারেন না। এটা আপনার জন্য সতর্ক বাণী- আপনার লেখা সবাই খাবেন না; যাঁরা খান না তাঁদের খাওয়ানোর জন্য জোর করবেন না; যাঁরা খাচ্ছেন ভেবে নিন তাঁরাই আপনার প্রকৃত বন্ধু; তাঁরা আপনার লেখার মান সম্বন্ধে সম্যক অবহিত আছেন, তারপরও আপনাকে উৎসাহিত করবার জন্য অতোটুকু প্রশংসা করে থাকেন। তাঁদেরকে শ্রদ্ধা করুন। লিখুন। লিখুন। লিখুন।


সারাংশ

সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ, প্রকাশক মহোদয়কে সবিনয়ে অনুরোধ করুন আপনার ৩০০ বই আপনাকে একদিনেই সরবরাহ করবার জন্য। ঢাকায় একুশে বইমেলায় লেখকদের বই কিন্তু নিজস্ব প্রকাশক ছাড়া অন্য প্রকাশকের স্টলে রাখা নিষিদ্ধ। বইমেলার বাইরে বাজারের স্টলগুলোতে আপনি বই নিয়ে তাঁদের কাছে অফার করে আশাহত হবেন- তাঁরা নিতে চাইবেন না, বলবেন- জায়গা নেই। আপনার সমস্ত বইয়ের খরচ বাবদ পুরো টাকা একবারই প্রকাশকের হাতে দিয়ে দিতে হবে, বই ছাপাবার আগে। টানাটানি থাকলে এ টাকা ধাপে ধাপে দিতে পারেন; প্রকাশককে এ ব্যাপারে অনুরোধ করতে পারেন। সাধারণত সবগুলো বই একবার ছাপা হলেও সবগুলো একসাথে বাঁধাই করা হয় না। বই ধীরে ধীরে বিক্রি হয়, আর নতুন করে বাঁধাই করা হয়। আর এতোসব চুক্তি সম্ভব হবে তখনই যখন আপনি কোনো ছোটোখাট প্রকাশকের সাথে এ কাজ করবেন। বড় বড় প্রকাশকগণের সাথে এহেন হাঙ্গামা করতে পারবেন না। আপনার পাণ্ডুলিপি ভালো হলে বড় প্রকাশকগণ বই ছাপতে রাজি হবেন সম্পূর্ণ বিনা পয়সায়; শুধু একটাই শর্ত হয়তো তাঁরা দেবেন যে প্রকাশিতব্য বইটির ৮০% বই আপনাকে কিনে নিতে হবে:):)

যাঁরা ইউনিকোডে টাইপ করবেন তাঁদের জন্য কিছু টিপস

ইউনিকোডে টাইপ করলে 'রেফ' আগের বর্ণের উপরে দেখা যায়; এ ছাড়াও আরও কিছু সমস্যা দেখা দিতে পারে। 'রেফ'-এর সমস্যা দেখা দিলে নিচের পদ্ধতিতে এগোন:

১) সবার আগে এখান থেকে এ ফাইলটি ডাউনলোড করুন। এটি usp10.dll এ্যাপ্লিকেশন ফাইল।

২) Go to C: Drive of your PC. Then follow the chain> Program Files> Common Files> OFFICE11. উপরের ডাউনলোড করা usp10.dll ফাইলটি এখানে কপি করুন। প্রয়োজনে আগের usp10.dll ফাইলটি কপি করে ব্যাকআপ হিসাবে অন্য জায়গায় রেখে দিতে পারেন।

এবার উপরের নিয়ম অনুযায়ী আপনার পেইজ সেট-আপ করুন। Solaimanlipi আমার কাছে সবচেয়ে ভালো মনে হয়। সবুজ অঙ্গনের ১৮শ সংখ্যা Solaimanlipi ফন্টে লিখা হয়েছিল।

সমস্যা এখানেই শেষ নয়। আপনার পিসিতে এটা সেট করার পর প্রকাশকের পিসিতে পুরোটা পালটে যেতে পারে। সেজন্য পিডিএফ করে পাঠানোই বুদ্ধিমানের কাজ। অনেক সময় পিডিএফ থেকে 'মিরর' প্রিন্ট করা কষ্টসাধ্য হতে পারে, সেক্ষেত্রে PDF Maker সফটওয়্যার দিয়ে 'মিরর ভিউ' পিডিএফ করে পাঠিয়ে দিন প্রকাশকের কাছে; সাধারণ ডকুমেন্টের মতোই তখন এটা প্রিন্ট করা যাবে।

পুরোনো অপারেটিং সিস্টেমে এসব সমস্যা দেখা দেবে; এক্সপি ২০০৭ বা তদপরবর্তী অপারেটিং সিস্টেমে কোনো সমস্যা হয় না।

বই ছাপতে খরচের খতিয়ান, এবং আমার বইয়ের বিজ্ঞাপন:):):)

সবগুলো হিসাব সম্পূর্ণ মনে নেই। তবে কাছাকাছি হিসাবগুলো নিম্নরূপ:

২০০৩ সনে আমির প্রকাশন থেকে ৯ ফর্মা সাইজের আমার স্খলন উপন্যাসের ৫০০ কপি ছাপতে ৩০ হাজার টাকা খরচ হয়েছিল।

২০০৪ সনে আমির প্রকাশন থেকে ১০ ফর্মা সাইজের আমার অন্তরবাসিনী উপন্যাসের ৩০০ কপি ছাপতে ২০ হাজার টাকা খরচ হয়েছিল।

২০০৪ সনে আমির প্রকাশন থেকে ৮ ফর্মা সাইজের আমার একটা ছোটগল্প সংকলন 'সুগন্ধি রুমাল'-এর ৩০০ কপি ছাপতে ১৮ হাজার টাকা খরচ হয়েছিল।

২০০৪ সনে আমির প্রকাশন থেকে ৬ ফর্মা সাইজের আমার খ্যাতির লাগিয়া উপন্যাসের ৩০০ কপি ছাপতে ১২ হাজার টাকা খরচ হয়েছিল।

২০০৫ সনে ১৬ ফর্মার ৩০০ কপি সবুজ অঙ্গন সাহিত্য সংকলন, কবিতা ও ছোটগল্পের ২০টি অণুগ্রন্থ একত্রে ছাপতে আমার ৫৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছিল।

২০০৫ সনে ৬ ফর্মা সাইজের আমার কবিতার বই অন্বেষা-এর ৩০০ কপি ছাপতে ২৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছিল। 

২০০৬ সনে ১৪ ফর্মার ৩০০ কপি সবুজ অঙ্গন অণু-উপন্যাস সংকলন, ১২ জন নবীন লেখকের ১২টি অণুগ্রন্থ একত্রে ছাপতে আমার ৪৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছিল।

২০০৬ সনে ১০ ফর্মা সাইজের আমার আই-ফ্রেন্ড উপন্যাস-এর ৩০০ কপি ছাপতে ৩০ হাজার টাকা খরচ হয়েছিল। 

২০০৭ সনে ৮ ফর্মা সাইজের আমার কবিতার বই 'নিঃসঙ্গ সময়ের সুখপাখি '-এর ৩০০ কপি ছাপতে ২৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছিল। 

২০০৯ সনে ৫ ফর্মার ২০০ কপি সবুজ অঙ্গন আন্তর্জালিক কবিতাগুচ্ছ ছাপতে আমার ২৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছিল।

২০১০ সনে ৭ ফর্মার ২০০ কপি সবুজ অঙ্গন ব্লগীয় কবিতাসংকলন ছাপতে ৩০ হাজার টাকার বেশি খরচ হয়েছিল। 

২০১০ সনে পালকি প্রকাশন থেকে ৬ ফর্মা সাইজের সবুজ অঙ্গন ১৫শ সংখ্যার ২০০ কপি ছাপতে ২০ হাজার টাকা খরচ হয়।

২০১১ সনে পালকি প্রকাশন থেকে সবুজ অঙ্গন ১৬শ সংখ্যার ২০০ কপি ছাপতে ২০০০০ টাকা খরচ হয়। কভার পেইজ আমি করেছিলাম, কাজেই ঐ খরচটা ধরা হয় নি। 

২০১২ সনের একুশে বইমেলায় পালকি প্রকাশন থেকে ৬ ফর্মা সাইজের সবুজ অঙ্গন ১৭শ সংখ্যার ২০০ কপি ছাপতে ২০০০০ টাকা খরচ হয়। 

২০১৩ সনের একুশে বইমেলায় পালকি প্রকাশন থেকে ৯ ফর্মা সাইজের সবুজ অঙ্গন ১৮শ সংখ্যার ২০০ কপি ছাপতে ২৫০০০ টাকা খরচ হয়। 

২০১৫ সনের একুশে বইমেলায় ৬ ফর্মা সাইজের আমার কবিতার বই 'অসম্পর্কের ঋণ' ৩০০ কপি ছাপাতে ৩৬ হাজার টাকা খরচ হয়েছিল।

উপরে খরচের যে খতিয়ান দেয়া হয়েছে তা ২০১২ সাল পর্যন্ত প্রযোজ্য। বর্তমান মূল্য তা থেকে অনেক বেশি হবে। সাধারণভাবে ২০১৫ সনে ৩০০ কপি বই ছাপানোর জন্য প্রতি ফর্মা ৬ হাজার টাকা খরচ ধরা হয়। ২০১৬ সনেও মোটামুটি খরচের হিসাব এরকমই ছিল, তবে ইত্যাদি গ্রন্থ প্রকাশসহ বড় বড় প্রকাশনীতে এ খরচের পরিমাণ একটু বেশি হবে, যেহেতু তাদের কাজের মান খুব উন্নত হয়ে থাকে। 

উপরের বইগুলোর অধিকাংশই খুব অপরিচিত প্রকাশনী থেকে ছাপানো হয়েছিল। ইত্যাদি গ্রন্থ প্রকাশ থেকে ছাপাতে খরচ একটু বেশি পড়েছিল, যেহেতু তাঁদের স্ট্যান্ডার্ড খুব ভালো। এই হিসাব বিবরণী থেকে নিজের জন্য প্রস্তুতি নিতে পারেন :) :)


দ্বিতীয় অধ্যায়

প্রথম অধ্যায় পড়ে অনেকেই হয়তো বই প্রকাশ করার একটা সাহস পেয়ে গেছেন। কিন্তু তারপরও ভাবছেন কীভাবে প্রকাশকের কাছে কথাটা তুলবেন, কিছুটা লজ্জা, 'পাছে লোকে কিছু বলে' ভাব, ইত্যাদি।
হাতে গোনা দু-একটা প্রকাশনী ছাড়া সবাই আপনার বই প্রকাশ করার জন্য সম্মত হবেন, এটা মনে রাখবেন। আপনার শুধু প্রয়োজন তাঁদের সাথে একটা সমঝোতা করে নেয়া। এরপর দেখবেন, আপনার প্রকাশকই আপনার সবচেয়ে বড় ও ঘনিষ্ঠ বন্ধু হিসেবে গড়ে উঠেছেন।

কোন্‌ প্রকাশকের কাছে যাবেন? 

প্রতিটা বইয়ের ৪ অথবা ৬ কিংবা ৮ নং পৃষ্ঠায় প্রকাশনীর ঠিকানা ও ফোন নম্বর দেয়া থাকে। আপনার পছন্দমতো প্রকাশকের কাছে গিয়ে বলুন আপনি একটা গল্প বা কবিতা বা উপন্যাস বা প্রবন্ধ সংকলন বের করতে চান- ৩০০ কপি। আগেই বলে নিন যে লেখার সফট কপি আপনিই তৈরি করে দেবেন। তারপর প্রকাশকই আপনাকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন।

আমার কাছে এ মুহূর্তে কয়েকটা প্রকাশনীর নম্বর আছে। এদের কাছ থেকে সবুজ অঙ্গন সহ আমার নিজের বই প্রকাশ করা হয়েছে বলে তাঁদের সাথে আমার ঘনিষ্ঠতা সবচাইতে বেশি।

জহিরুল আবেদীন জুয়েল (ইত্যাদি গ্রন্থপ্রকাশ) : ০১৭১৫৪২৮২১০
কবি আদিত্য অন্তর (ইত্যাদি গ্রন্থ প্রকাশ) : ০১৭১২২৩৫৩৪২
পান্থ বিহোস (পালকি প্রকাশন) : ০১৬৭৩৬৩৬৭৫৭
কবি ইমন মজুমদার (মুক্ত স্বদেশ) : ০১৭১২৬৭১৩৪৬
কবি তৌহিদুল ইসলাম কনক (আমির প্রকাশন) : ০১৯১৮১৯১১৯০


এ ছাড়া নিচের কয়েকটা প্রকাশনীর নম্বর আমার কাছে আছে, কিন্তু তা আপডেটেড কিনা জানি না : 

আগামী প্রকাশনী (ওসমান সাহেব) : ০১৮১৯২১৯০২৪
একাডেমী প্রেস এন্ড পাবলিকেশন লিঃ (সাহানা রহমান) : (নামটা বোধ হয় সঠিক হলো না) : ৮১২৫৩৯৪
রাইটারস ইংক (প্রফেসর নিয়াজ জামান) : ৯৩৩৫৬০৭


আপনি নিজেও একজন কবি বা লেখকের স্পন্সর হতে পারেন। 

অনেকেই লেখেন না, কিন্তু মনে খুব সাধ বা শখ পোষেন বই ছাপবার। আপনি আপনার পছন্দের দু-একজন লেখক বেছে নিন, যাঁদের বই ছাপবার খরচ আপনি নিজে বহন করবেন। আপনার এই পবিত্র চেষ্টায় একজন নিভন্ত অথচ সম্ভাবনাময় লেখক সেরা লেখক রূপে গড়ে উঠতে পারেন। মনে রাখুন, নবীন লেখকদের বই সচরাচর বিনে পয়সায় কেউ ছাপেন না। প্রতিভাধর অনেক ভালো লেখকের নিজের টাকায় বই বের করার সামর্থ থাকে না। আপনার কারণে তাঁরা লেখক হিসেবে পরিচিত লাভ করার সুযোগ পেয়ে যেতে পারেন।
Share:

অন্যরকম প্রকাশনী এখন আপনার পাশে:: ছাত্র বয়সেই নিজের বই ছাপা হবে!

যে কোন আঙ্গিকেই যারা লেখালেখি করেন, তাদের সবারই স্বপ্ন থাকে ঝকঝকে ছাপায় তার বই বের হবে, তামাম দুনিয়ার লোক তা পড়বে, বাহবা দেবে, বন্ধু ও পরিচিত মহলে তাকে নিয়ে আলোচনা-সামালোচনা হবে। কিন্তু নানাবিধ বাস্তবতায় সে স্বপ্ন আলোর মুখ দেখে না। ছাত্র বয়সে সেটা আরো কঠিন কল্পনা। কিন্তু সে স্বপ্ন আজ বাস্তব হতেই পারে!!! প্রতিশ্রুতিশীল ও প্রতিভাবান কিশোর-তরুণ লেখকদের লেখালিখিকে উৎসাহিত ও সুবিস্তৃত করতে অন্যরকম প্রকাশনী এখন আপনার পাশে। এখন থেকে প্রতি বছর দুটি বিশেষ ধরনের বই প্রকাশ করবে অন্যরকম প্রকাশনী। বিস্তারিত নিচে দেয়া হল। ভার্সিটি পড়ুয়া লেখকদের জন্য:: • বাংলাদেশের যে কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত যে কেউ লেখা পাঠাতে পারবেন। • লেখার ধরনসমূহ: গল্প, ছোটগল্প, প্রবন্ধ, ভ্রমণকাহিনী, প্রতিবেদন, গবেষণাধর্মী লেখা, অনুবাদ, এবং নাটিকা। • লেখা ডাকযোগে/কুরিয়ারে অথবা ইমেইলের মাধ্যমে পাঠানো যাবে। • লেখার সঙ্গে লেখকের বিশ্ববিদ্যালয় প্রদত্ত পরিচয়পত্রের সত্যায়িত ফটোকপি পাঠাতে হবে। লেখা পাঠানোর সর্বশেষ তারিখ: ২৩ শে জুলাই, ২০১২। লেখা বাছাই ও বই প্রকাশ: আগামী ২৩শে জুলাই ২০১২ তারিখের মধ্যে ডাকযোগে/কুরিয়ারে//ই-মেইলে দুটি ভিন্ন ক্যাটেগরিতে পাঠানো লেখাগুলোই কেবল বই প্রকাশের জন্য বিবেচিত হবে।এই লেখাগুলো থেকে বাছাইকৃত লেখা নিয়ে বই প্রকাশ করা হবে। যে সমস্ত লেখকের লেখা বইয়ে স্থান পাবে , তাদের ঠিকানায় অন্যরকম প্রকাশনীর পক্ষ থেকে বইয়ের সৌজন্য কপি পাঠানো হবে। বই পাঠানোর ক্ষেত্রে ওয়েবভিত্তিক প্রতিষ্ঠান http://www.rokomari.com এর সহায়তা নেওয়া হবে। লেখা নির্বাচনের ক্ষেত্রে অন্যরকম প্রকাশনীর সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে বিবেচিত হবে। বিঃদ্রঃ সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকেই এইচএসসি পড়ুয়াদের জন্য কোন সুযোগ রাখা হয়নি। অন্যরকম প্রকাশনী মনে করে যে, এইচএসসির ২০/২২ মাস লেখা পড়া সারা জীবনের ভিত্তি গড়ে দিতে সবচেয়ে বেশী ভূমিকা রাখে। পড়া-লেখাই সেখানে মুখ্য হোক অবশ্যই প্রত্যেকে নিজের মত লেখালেখির অধিকার রাখে। আর যেহেতু এই ইভেন্টটি প্রতি বছর হবে, ভার্সিটি উঠে এই ছেলে-মেয়েদের সবাই লেখা প্রকাশের সুযোগ পাবে। লেখা পাঠানোর ঠিকানা: ডাকযোগে/ কুরিয়ারে লেখা পাঠাতে, ‘অন্যরকম প্রকাশনী’ ৩৯ এ.আর.এ ভবন ৪র্থ তলা, কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, ঢাকা-১২১৫ অথবা, ই-মেইল করুন: যোগাযোগ: আয়োজন সংক্রান্ত যে কোন জিজ্ঞাসায় যোগাযোগ করুন 01838666487 এই নম্বরে। 
Share:

:: বই প্রকাশের খরচ ও অন্যান্য প্রসঙ্গ ::



আমরা যারা লেখালেখি করি, ফেব্রুয়ারির গ্রন্থমেলা সামনে রেখে তাদের মধ্যে বই প্রকাশ নিয়ে একটা চিন্তাভাবনা শুরু হয়ে যায়। মুদ্রণ ও প্রকাশনা জগত্ সম্পর্কে যাদের ধারণা নেই তাদেরকে এ সম্পর্কে মোটামুটি ধারণা দেওয়াই এই লেখার উদ্দেশ্য।
একটি বই প্রকাশ করতে হলে যথাক্রমে এই কাজগুলো আমাদের করতে হয় :
কম্পোজ
প্রুফ রিডিং এবং সম্পাদনা
অলঙ্করণ ও প্রচ্ছদ ডিজাইন
মেকআপ
পেস্টিং অথবা কম্পিউটারে ফর্মা সেটিং
ট্রেসিং ও পজেটিভ
প্রচ্ছদের পজেটিভ
প্লেট তৈরি
ইনার ও প্রচ্ছদের জন্য কাগজ
ছাপা
লেমিনেশন
বাঁধাই।
ফর্মা কাকে বলে : একটি ডিমাই (২৩ ইঞ্চি–১৮ ইঞ্চি) বা ক্রাউন (২০ ইঞ্চি–১৫ ইঞ্চি) কাগজ মানেই এক ফর্মা। সাড়ে আট বাই সাড়ে পাঁচ ইঞ্চি (প্রায়) সাইজের বইয়ে ১৬ পৃষ্ঠায় এক ফর্মা আর বড় সাইজের বইয়ে ৮ পৃষ্ঠায় এক ফর্মা। ১৬ পৃষ্ঠায় ফর্মার বই করতে হলে ডাবল ডিমাই কাগজ এবং ৮ পৃষ্ঠার বইয়ে ডাবল ক্রাউন কাগজ ব্যবহার করা ভালো। এই সাইজ দুটো হল কমন সাইজ। আমাদের দেশের এবং বিদেশের প্রকাশকরা অবশ্য এর বাইরেও বিভিন্ন সাইজের বই বের করে। আমাদের দেশের মার্কেটে সাধারণত ডাবল ডিমাই এবং ডাবল ক্রাউন সাইজের কাগজ বেশি পাওয়া যায়। সেদিক দিয়ে একটা ডাবল কাগজের দুই দিক ছাপা মানে দুই ফর্মা। তার মানে একটা দশ ফর্মার বই ছাপতে আপনার দরকার হবে পাঁচটি ডাবল ডিমাই বা ডাবল ক্রাউন কাগজ। এভাবে ৫০০ বই করতে কতটি কাগজ দরকার তা আপনি সহজেই বের করতে পারবেন। বইয়ের ফর্মা সংখ্যার হেরফের হলেও হিসাব করতে কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয়। এখন চটজলদি বের করে ফেলুন আপনার বইটি কয় ফর্মার হবে এবং কত শিট কাগজ আপনার দরকার। যত শিট কাগজ দরকার তাকে ৫০০ দিয়ে ভাগ করলেই আপনার রিমের হিসাবটি বের হয়ে আসবে। অর্থাত্ ৫০০ শিট=১ রিম। মনে রাখবেন, প্রিন্টিং ও বাইন্ডিংয়ের কয়েকটি পর্যায়ে যেহেতু অনেক কাগজ নষ্ট হয় তাই ৫০০ বই পেতে হলে আপনার কমপক্ষে আরও ৪০-৫০টি বইয়ের ম্যাটেরিয়াল বেশি দিতে হবে। বর্তমানে বাজারে ৮০ গ্রাম ডাবল ডিমাই বসুন্ধরা কাগজের মূল্য ২০০০ টাকা/রিম (প্রায়)। ডাবল ক্রাউন ১৪০০ টাকা/রিম (প্রায়)। এর চেয়ে বেশি এবং কম দামের কাগজ বাজারে আছে। ডিসেম্বরের দিকে কাগজের দাম সাধারণত বৃদ্ধি পায়। সাধারণ মানের বইয়ে ৬০ থেকে ৮০ গ্রাম কাগজ ব্যবহার হয়। গ্রাম হচ্ছে কাগজের পুরুত্বের হিসাব।
প্লেট কী : প্লেট হচ্ছে অ্যালুমিনিয়ামের তৈরি একটি মুদ্রণ অনুষঙ্গ। আপনার বইটি যদি ডাবল ডিমাই মেশিনে ছাপতে চান তবে বইটি যত ফর্মার হবে ততটি প্লেটের দরকার হবে। প্রতিটি প্লেটের মেকিং চার্জসহ দাম পড়বে ৩০০ টাকার মতো। তবে সময়ভেদে গত বছর ৬০০ টাকা পর্যনন্ত দাম ওঠে। প্লেট করার আগে আপনার লেখাগুলোকে ট্রেসিং বা পজেটিভ আকারে বের করতে হবে। বইয়ের মেকআপ করা থাকলে প্রতিটি ট্রেসিং নিতে খরচ পড়বে ১৫ টাকা। এক ফর্মায় ৮টি ট্রেসিং লাগে। আউটপুট নিতে হলে প্রতি বর্গইঞ্চি/প্রতি কালারের জন্য দরকার হবে ৫০ থেকে ৬০ পয়সা। পজিটিভ করতে হলে ফর্মা সেটিং আগে করে নিতে হবে। তবে বাংলা পজেটিভ করতে ফন্টের সমস্যার দিকে খেয়াল রাখতে হবে।
কভার সাধারণত ছাপা হয় ডিমাই মেশিনে। প্রতিটি ডিমাই প্লেটের জন্য খরচ পড়বে ১৫০ টাকার মতো। উভয় ক্ষেত্রেই প্রতি কালারের জন্য একটি প্লেট ব্যবহার করতে হবে। তার মানে আপনার বইটির ভেতরের অংশ যদি এক কালারে ছাপা হয় তবে তার জন্য প্রতি ফর্মায় একটি প্লেট, যদি দুই কালারে ছাপা হয় তাহলে প্রতি ফর্মার জন্য দুটি প্লেট আর যদি চার কালারে ছাপা হয় তবে প্রতি ফর্মার জন্য চারটি প্লেট দরকার হবে।
বইয়ের প্রচ্ছদ সাধারণত চার কালারে ছাপা হয়, তাই এর জন্য চারটি ডিমাই সাইজের প্লেট দরকার হবে।
প্রচ্ছদ : বই বের করতে হলে প্রচ্ছদের দিকে বিশেষ খেয়াল দেওয়া উচিত। এক্ষেত্রে প্রচ্ছদশিল্পী থেকে শুরু করে সব কাজেই প্রফেশনালদের ব্যবহার করতে হবে। মনে রাখা উচিত, প্রিন্টিং টেকনোলজি বেশ জটিল। তাই এ কাজে যে-ই জড়িত হবে সে যেন প্রিন্টিংয়ের এ টু জেড অবগত থাকে। আর বইয়ের মূল আকর্ষণই হচ্ছে প্রচ্ছদ এ কথা তো আমরা জানিই। বড় বড় আর্টিস্টরা একটি প্রচ্ছদের জন্য বিভিন্ন রকম পারিশ্রমিক নিয়ে থাকেন। তবে প্রচলিত মানের একজন প্রচ্ছদশিল্পীর একটি কাজের পারিশ্রমিক আড়াই হাজার টাকার মতো।
ইলাস্ট্রেশনের খরচ নির্ভর করে ভেতরে কী পরিমাণ কাজ থাকবে তার ওপর।
প্রুফ রিডিং এবং সম্পাদনা : বই প্রকাশের ক্ষেত্রে সম্পাদনা একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। কিন্তু আমাদের দেশে এই পেশায় যোগ্য লোক নেই বললেই চলে। তবু আপনার প্রকাশনাটি মানসম্পন্ন করতে চাইলে একজন যোগ্য সম্পাদক খুঁজে বের করা উচিত। সাধারণ মানের লেখকরা ধারণাই করতে পারেন না তার লেখাটিতে কত ধরনের খুঁত থেকে যায়। একজন ভালো সম্পাদক সেগুলো দূর করতে পারেন। তবে হতাশার কথা এই যে, আমাদের দেশে বই প্রকাশের ক্ষেত্রে প্রায় কারওই সম্পাদনার ওপর কোনো বাজেট থাকে না। তবে প্রুফ রিডাররা আছেন। তারা টুকটাক ভুলভাল যে ধরেন তাতেও বইয়ের মান কিছুটা বজায় থাকে। মনে রাখা দরকার, আপনি যা জানেন তার মধ্যে কতটুকু ত্রুটি আছে সে ব্যাপারে আপনার মোটেই ধারণা নেই। যদি থাকত তবে আপনি ভুল লিখতেন না। বই প্রকাশের পরে তাতে যে কোনো ধরনের ভুল থাকাটা কতটা হাস্যকর তারা মোটেই জানেন না যারা ব্যাপারটাকে উপেক্ষা করেন। কয়েকদিন আগে এক বইমেলায় একটি বইয়ের নাম দেখলাম, ‘লেলিন….’। বুঝতেই পারছেন যারা লেনিনের নামটি ঠিকমতো জানেন না, তারা লেনিন সম্পর্কে কী বই বের করবেন। আর একজন বিজ্ঞ পাঠক যখন বইয়ের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে এ ধরনের ভুল দেখবেন তখন ওই বই হাতে নিয়েও দেখবেন না। তাই এই ব্যাপারটিতেও আপনাকে নজর দিতে হবে।
এবারে আমরা একটা বই প্রকাশের ক্ষেত্রে সম্ভাব্য হিসাব করব। এই হিসাব চূড়ান্ত কোনো হিসাব নয়। এর চেয়ে কম অথবা বেশি বাজেটেও এ ধরনের একটা বই প্রকাশ সম্ভব হতে পারে। এটা নির্ভর করে আপনি কতটা কোয়ালিটি মেইনটেইন করবেন তার ওপর।
নমুনা হিসাব
বইয়ের সাইজ : ৫ ফর্মা (৮০ পৃষ্ঠা)
কাগজ : ৮০ গ্রাম বসুন্ধরা
ভেতরের ছাপা এক কালার
কভার চার কালার, লেমিনেশন ও বোর্ড বাঁধাই
সংখ্যা : ৫০০ কপি
ইলাস্ট্রেশন …………………. ০০০০
মেকআপ ও ট্রেসিং ………….. ২০০০
প্রুফ রিডিং ………………… ২০০০
কাগজ ২ রিম ১৫ দিস্তা ……… ৫৫০০
পেস্টিং …………………….. ৫০০
ডাবল ডিমাই প্লেট ৫টি ………. ১৫০০
ছাপা ৫ প্লেট ………………… ২০০০
আর্টপেপার ১২০ গ্রাম ৮ দিস্তা …… ১৫০০
৭০ গ্রাম জ্যাকেটের পেপার ৪ দিস্তা … ৪০০
প্রচ্ছদ ডিজাইন …………. ২০০০/২৫০০
প্রচ্ছদের পজেটিভ ……………… ৫০০
ডিমাই প্লেট ৪টা ………………. ৬০০
প্রচ্ছদ ছাপা …………………. ১৬০০
পোস্তানির কাগজ ………………. ৯০০
লেমিনেশন ……………………. ৭০০
বাঁধাই ………………. ..........৭৫০০
পোস্তানি প্রিন্ট ………………….. ৫০০
অন্যান্য ……………………… ১০০০
প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের খরচে যাদের বই প্রকাশিত হয় তাদেরকে খরচের বিষয় নিয়ে মাথা ঘামাতে হয় না। কিন্তু যারা প্রকাশকের সঙ্গে চুক্তিতে কিংবা স্বউদ্যোগে বই ছাপাতে চান তাদের জন্য কিছু হিসাব-নিকাশ এখানে উল্লেখ করা হবে। তবে তার আগে সবার প্রতি অনুরোধ, আপনার লেখাটিকে যদি মানোত্তীর্ণ মনে করেন তাহলে ভালো কোনো প্রকাশকের কাছে জমা দিন। কোনো প্রতিষ্ঠিত প্রকাশক যদি আপনার পাণ্ডুলিপিটি গ্রহণ করে এবং দুই বছর পরেও সেটা প্রকাশ করে তো তাদেরকে দেওয়াই উত্তম। কোনো প্রকাশক যদি একান্তই তা না করতে চায় তাহলে নিজ খরচে ভালো কোনো প্রকাশকের মাধ্যমে বইটি বের করুন। অনেক বড় প্রকাশকও আজকাল এ পদ্ধতিতে বই প্রকাশ করে। তবে ভালো প্রকাশক আপনার খরচে বই প্রকাশ করলেও পাণ্ডুলিপিটা মানসম্পন্ন কি না দেখে নেবে। পদ্ধতিটা হল এমন, প্রকাশক বইটা প্রকাশ করবে তবে আপনাকে নির্দিষ্ট সংখ্যক বই ক্রয় করতে হবে। সেই নির্দিষ্ট সংখ্যাটা হতে পারে ৩৫০। তবে এই পদ্ধতির আসল ব্যাপারটি হচ্ছে প্রকাশক আপনার কাছ থেকে যে টাকাটা নেবে তা দিয়েই বইটা প্রকাশ করবে। তারা এর পেছনে কোনো ইনভেস্ট করবে না। এরা মূলত বই ছাপানোর সময়ই লেখকের কাছ থেকে তাদের লাভটা আদায় করে নেয়। আর অনেকে সংখ্যার হিসাবে কারচুপি করে। দেখা গেল, আপনার কাছ থেকে এক হাজার বই ছাপানোর খরচ নিয়ে তারা পাঁচশো বই ছাপল। তাই খেয়াল রাখবেন, যত সংখ্যক বই ছাপানো হবে বলে আপনার সঙ্গে চুক্তি হয়েছে ততসংখ্যক বই ছাপা হচ্ছে কি না। কাগজ, ছাপা ও বাঁধাইয়ে মান বজায় থাকছে কি না। বইয়ের দাম ওই প্রকাশনীর ওই মানের অন্য বইয়ের সমতুল্য কি না।
নিজ খরচে যারা বই বের করবেন তারা নিচের খরচের হিসাবটা বোঝার চেষ্টা করবেন। যাদের এ ব্যাপারে কোনো ধারণা নেই তাদের কাছে কঠিন মনে হলেও আশা করি এটা আপনাকে অনেক কাজে দেবে।

বিষয়টির প্রতি অনেকের আগ্রহের কারণে এই পোস্টটি দেওয়া হল। এই নমুনা হিসাবের সাথে আপনার বইয়ের সাইজ হিসাব করে বের করে নিন আপনার বইটি ছাপাতে কত টাকা খরচ হতে পারে। এ ব্যাপারে যে কোনো প্রশ্ন থাকলে এই পোস্টে আলাপ করতে পারেন।
সবাইকে শুভেচ্ছা।
Share:

Definition List

Unordered List

Support